বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার
গুলশান কার্যালয়ের সামনে আজ শনিবার
সকাল সাতটার দিকে অবস্থান নেয় পুলিশ।
এক ঘণ্টা পর সকাল আটটার দিকে
কার্যালয়ের মূল ভবনে ঢোকেন পুলিশ
সদস্যরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা তল্লাশি শেষ
করে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে খালি
হাতে ফিরে যেতে দেখা যায় তাঁদের। এ
সময় তল্লাশির সঙ্গে যুক্ত পুলিশের গুলশান
বিভাগের কর্মকর্তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে
কোনো কথা বলেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে
কথা বলে জানা যায়, তল্লাশি শুরুর আগে
খালেদা জিয়ার এই কার্যালয় ও এর
আশপাশের সড়কগুলোতে নিরাপত্তা
জোরদার করে পুলিশ। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ওই
এলাকায় সাধারণ কোনো যানবাহন ঢুকতে
দেওয়া হয়নি।
ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি
গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব ও বিভিন্ন
গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীদের দেখা গেছে।
সকাল আটটার দিকে একদল পুলিশ সদস্য
খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের মূল ভবনে
ঢোকেন। এ সময় অন্তত ২০ জন পুলিশ সদস্য
কার্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নেন।
সকাল নয়টার দিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম
মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কার্যালয়ের
সামনে আসেন। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে
তিনি কার্যালয়ের ভেতর যান। এর মিনিট
বিশেক পর দলের আরেক যুগ্ম মহাসচিব
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ঘটনাস্থলে
আসেন। এ সময় বিএনপির শীর্ষ কোনো
নেতাকে গুলশান কার্যালয়ে আসতে দেখা
যায়নি। তবে পুলিশ চলে যাওয়ার পর
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম
খান, গয়েশ্বর রায়, জয়নাল আবদীনসহ
অনেকেই ওই কার্যালয়ে আসেন।
তল্লাশির পর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি
‘তালিকা’ দেওয়া হয়েছে বলে
জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। পুলিশের
গুলশান থানার পরিদর্শক (এসআই) আজিজুল
ইসলাম স্বাক্ষরিত সেই ‘তালিকায়’
তল্লাশিতে প্রাপ্ত মালামালের পরিমাণ
‘শূন্য’ বলে উল্লেখ করা হয়। তবে সেখানে
তল্লাশির স্থান হিসেবে বিএনপির
চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের ঠিকানা
লেখা ছিল না।
পুলিশের তল্লাশি শেষে কার্যালয়ের
ভেতরে ঢোকেন গণমাধ্যমকর্মীরা। মূল
কলাপসিবল গেটটি খোলা ছিল।
কার্যালয়ের কর্মচারীরা জানান, এই
গেটের তালা ভেঙে পুলিশ ভেতরে
ঢোকে। এক তলা ও দোতলার বিভিন্ন
কক্ষে তল্লাশি চালানো হয় বলে তাঁরা
জানান। এক তলার নয় নম্বর কক্ষটির দরজার
লক খুলে তল্লাশি তৎপরতা বেশি ছিল। তবে
লক ভাঙা পাওয়া গেলেও কাগজপত্র
এলোমেলো ছিল না। বেশ কয়েকজন
কর্মচারী বলেন, পুলিশ সঙ্গে মিস্ত্রি
ছিল। এই মিস্ত্রিদের দিয়েই তালা ভাঙা
হয়। আর ফাইলসহ বিভিন্ন কাগজপত্রে
ভিডিও ও স্থিরচিত্র ধারণ করেন পুলিশ
সদস্যরা।
এদিকে দোতলায় তল্লাশি চালালেও
খালেদা জিয়ার কক্ষে ঢোকেনি পুলিশ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, অজ্ঞাত এক
ব্যক্তিকে দিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি)
ও ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে সার্চ ওয়ারেন্ট
করিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। দলের
নেতৃবৃন্দকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়নি বলে
দাবি করেন তিনি।
এই জিডির কপি দেখান বিএনপির নেতা
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। জিডিতে
সময় হিসাবে গতকাল ১৯ মে সন্ধ্যা ৭টা ৫
মিনিট লেখা ছিল। তবে গুলশান ঠিকানা
উল্লেখ করা হলেও কোথায় বিএনপির
কার্যালয় লেখা ছিল না। জিডিতে লেখা
রয়েছে, গুলশান-২ নম্বরের ৮৬ নম্বর সড়কের ৬
নম্বর বাড়ি ও এর আশপাশের এলাকায়
রাষ্ট্রবিরোধী ও আইনশৃঙ্খলাপরিপন্থী,
রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা বিনষ্টসহ বিভিন্ন ধরনের
স্টিকার ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে
সামগ্রী মজুতের খবর গোপন সূত্রে জানা
গেছে।
আরও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে তল্লাশিকে ঘিরে যা হলো
Advertisemen
Advertisemen