শিক্ষাবর্ষ শুরুর সাড়ে পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পর ‘ভুলে ভরা’ পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এতে প্রাথমিক স্তরের পাঁচটি বইয়ে ছয়টি ভুলের সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। এনসিটিবির দুজন সদস্য আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
প্রাথমিকের যেসব ভুলের সংশোধনী দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের ৬৮ পৃষ্ঠায় কুসুমকুমারী দাশের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতাটি রয়েছে। এনসিটিবির কর্মকর্তাদের মতে, এই কবিতাতেই বড় ভুল হয়েছিল। এই কবিতায় শব্দ যেমন উল্টোপাল্টাভাবে ছাপা হয়েছে, তেমনি ভুল শব্দও ছাপা হয়েছে। সংশোধনীপত্রে পুরো কবিতাটি সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। এতে তথ্যসূত্রও উল্লেখ করা হয়েছে। একই শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ের ৫৮ পৃষ্ঠায় ‘সায়েরা বেগম’ এর নামটি সংশোধন করে ‘সায়েরা খাতুন’ (তিনি বঙ্গবন্ধুর মা) করা হয়েছে। একই শ্রেণির ইংরেজি ভার্সনের হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বইয়ের পেছনের কভারে ‘Heart’ এর স্থলে ‘Hurt’ করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের ৫৩ পৃষ্ঠায় ‘মৌ’ এর জায়গায় সংশোধন করে ‘মউ’ করা হয়েছে। এ ছাড়া পঞ্চম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের তৃতীয় পৃষ্ঠায় ‘সমুদ’ বানান সংশোধন করে ‘সমুদ্র’, একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় ‘ঘোষনা’ বানান সংশোধন করে ‘ঘোষণা’ করা হয়েছে।
এনসিটিবির সদস্য রতন সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, সংশ্লিষ্ট সবাইকেই এই সংশোধনীপত্র দেওয়া হচ্ছে।
চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে বিভিন্ন ধরনের ভুলভ্রান্তি থাকায় এবং বর্ণ শেখাতে অসংলগ্ন উদাহরণ দেওয়ায় বিতর্কের মুখে পড়ে শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনসিটিবি। পাশাপাশি কয়েকটি পাঠ্যপুস্তক থেকে কয়েকজন প্রগতিশীল লেখকের কিছু গল্প-কবিতা বাদ দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে আন্দোলন হয়। অভিযোগ উঠেছে, কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক একটি সংগঠন পাঠ্যবই থেকে যেসব বিষয় বাদ দেওয়ার দাবি করেছিল, এবারের পরিবর্তন তার সঙ্গে মিলে গেছে। এর মাধ্যমে পাঠ্যবইয়ের কোনো কোনো লেখায় সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে। এ জন্য বিভিন্ন মহল থেকে এই পরিবর্তন বাদ দিয়ে আগের মতো বই দেওয়ার দাবি করা হচ্ছে।
অবশেষে ‘ভুলে ভরা’ পাঠ্যবইয়ের সংশোধন
Advertisemen
Advertisemen